ধরন বিষয় লেখক প্রকাশনী Distributor প্রকৃতি Cover Designer পুরস্কার কিওয়ার্ড test
![]() সংবাদপত্রে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা একাত্তরের ঘাতকদের জবান জুলুম ষড়যন্ত্র চিত্র দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস (সম্পাদক) বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট: ২০১৩ প্রচ্ছদ: মোমিন উদ্দীন খালেদ পৃষ্ঠা: ৬৪৭ Available মূল্য: ৫০০ ISBN: 978-984-732-001-4 সংক্ষেপ যুদ্ধ ও গণমাধ্যমের সম্পর্ক সব সময়ই সাংঘর্ষিক। যেকোনো যুদ্ধে প্রথম মৃত্যু হয় সত্যের। সত্যের প্রতীক ধরা হয় সংবাদপত্রকে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম শহীদদের অন্যতম এ দেশের সংবাদপত্রগুলো। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দেশের সংবাদপত্রের ভূমিকা ছিল দ্বিধান্বিত। কোনো কোনো সংবাদপত্র যেমন সামরিক বিধিনিষেধ এবং শাসকের বন্দুকের নলের মুখে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে হয়ে উঠেছিল কৌশলী, তেমনি কিছু সংবাদপত্র এসবের কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল। আর কিছু সংবাদপত্র ছিল মতাদর্শিকভাবেই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী। সে সময় মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এসব সংবাদপত্রের ভূমিকা কী ছিল, কিভাবে তারা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরোধিতা করেছিল মূলত তা নিয়েই একটি বিশাল বই প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট। দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসের সম্পাদনায় বইটির শিরোনাম করা হয়েছে 'সংবাদপত্রে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা : একাত্তরের ঘাতকদের জবান জুলুম ষড়যন্ত্র চিত্র'।
বইটিতে রয়েছে ১১টি অধ্যায়- 'রিপোর্ট ও সম্পাদকীয় বিষয়বস্তু', 'রিপোর্ট : দৈনিক সংগ্রাম', 'রিপোর্ট : দৈনিক পাকিস্তান/দৈনিক বাংলা', 'রিপোর্ট : ইত্তেফাক', 'রিপোর্ট : পূর্বদেশ', 'সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় : দৈনিক সংগ্রাম', 'চিঠি, বেতার কথিকা, সাক্ষাৎকার ও টিভি ভাষণ : দৈনিক সংগ্রাম', 'সম্পাদকীয় : দৈনিক পাকিস্তান', 'সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় : দৈনিক পূর্বদেশ', 'চিঠি : দৈনিক পূর্বদেশ' ও 'সম্পাদকীয় : ইত্তেফাক'। বইটিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধকালীন দৈনিক ইত্তেফাক ছিল বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রধান কণ্ঠস্বর। দৈনিক পাকিস্তান পরিবেশন করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ। অন্যদিকে দৈনিক সংগ্রাম ছিল স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র। তাই বইটির প্রায় অর্ধেক পৃষ্ঠাজুড়েই রয়েছে এ পত্রিকার রিপোর্ট, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয়, চিঠি, বেতার কথিকা, সাক্ষাৎকার ও টিভি ভাষণ। যুদ্ধকালীন হানাদারদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, লুটপাট, ধর্ষণ, অগি্নসংযোগের কোনো খবরই ছাপা হয়নি এ পত্রিকায়। বরং এতে হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে নিয়মিত খবর প্রকাশ করা হতো। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর কোনো পত্রিকা বের হতে না পারলেও বেরিয়েছিল সংগ্রাম। পত্রিকাটি সব সময় প্রমাণের চেষ্টায় থাকত, দেশে কোনো গোলযোগ নেই, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী ভূমিকার কথা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হতো। মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামীদের আখ্যায়িত করা হতো রাষ্ট্রবিরোধী, ভারতের দালাল, বিচ্ছিন্নতাবাদী দুষ্কৃতকারী ও অনুপ্রবেশকারী হিসেবে। দৈনিক পূর্বদেশও ছিল স্বাধীনতাবিরোধী স্রোতের মতাদর্শে বিশ্বাসী। মালিক পক্ষের প্রচণ্ড বিরোধিতা ও চূড়ান্ত অসহযোগিতার মুখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে নিজেদের প্রকৃত চিন্তা-চেতনা প্রকাশ করতে পারেননি। ফলে পত্রিকাটি আদ্যোপান্ত পাকিস্তানি হানাদারদের তোষামোদকারী ন্যক্কারজনক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। দৈনিক সংগ্রামের কয়েকটি রিপোর্টের শিরোনাম ছিল এ রকম- 'পূর্ব পাক জামায়াতের মজলিসে আমলার দ্বিতীয় দিনের প্রস্তাব : গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার মাধ্যমেই পাকিস্তান শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ হবে' (১২ জানুয়ারি ১৯৭১)। 'মওলানা মওদুদীর ঘোষণা : কোন শক্তিই ইসলামী বিপ্লব রোধ করতে পারবে না' (১৩ জানুয়ারি ১৯৭১)। "শেখ সাহেব কি 'গান্ধী' সাজবেন" (২০ জানুয়ারি ১৯৭১)। 'পূর্ব পাকিস্তানের শহর ও পল্লী এলাকায় শান্তি অব্যাহত রয়েছে' (৩ এপ্রিল ১৯৭১)। অধ্যাপক গোলাম আযমের বেতার ভাষণ : '৭ কোটি পূর্ব পাকিস্তানের ভাগ্য নিয়ে জঘন্য খেলা বন্ধ কর' (১২ এপ্রিল ১৯৭১)। এ পত্রিকাটির কয়েকটি সম্পাদকীয়র শিরোনাম ছিল- 'জনতা পাকিস্তান চায়' (১৫ এপ্রিল ১৯৭১)। 'স্বাভাবিক জীবনযাত্রা' (৭ এপ্রিল ১৯৭১)। 'ভারতীয় অপপ্রচারের ব্যর্থতা' (৮ এপ্রিল ১৯৭১)। 'দুষ্কৃতকারীদের ধরিয়ে দিন' (৪ মে ১৯৭১) দৈনিক পূর্বদেশের কয়েকটি রিপোর্টের শিরোনাম ছিল- 'ছ'দফা ছিল জনগণকে প্রতারণার আবরণ মাত্র- খান এ সবুর' (৬ এপ্রিল ১৯৭১)। 'বিশ্ব জানে ভারতই পাকিস্তানের একমাত্র শত্রু : জামায়াতে ইসলামী' (৮ এপ্রিল ১৯৭১)। 'বিচ্ছিন্নতাই ছিল মুজিবের লক্ষ্য- কাসুরী (১৯ এপ্রিল ১৯৭১) দৈনিক পাকিস্তানের কয়েকটি রিপোর্টের শিরোনাম ছিল এমন- 'শান্তি ও সংহতি কমিটির সভা : দেশদ্রোহীদের প্রতি কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান' (১৮ মে ১৯৭১)। 'জামায়াত নেতৃবৃন্দের আহ্বান : দেশের মাটি থেকে পাকিস্তানবিরোধীদের উৎখাত করুন' (২০ মে ১৯৭১)। 'জনগণের প্রতি জামায়াত নেতৃবৃন্দ : ভারতীয় চক্রান্ত থেকে দেশকে রক্ষা করুন' (২১ মে ১৯৭১)। সূত্র : কালের কন্ঠ ![]() ![]() ![]() |